মধ্যপ্রাচ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক ঘনিষ্ঠতা নিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের জটিল ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ট্রাম্প ফের নেতানিয়াহুর “কৌশলগত ফাঁদে” পা দিয়েছেন।
বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ইরান ও ফিলিস্তিন প্রশ্নে নেতানিয়াহু এমন একটি রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করেছেন, যেখানে ট্রাম্প প্রশাসনের সমর্থন আবারও ইসরায়েলের একচেটিয়া কৌশলকে জোরদার করতে পারে। বিশেষ করে, ২০২৪ সালের মার্কিন নির্বাচনের আগে রিপাবলিকান রাজনীতিতে ইসরায়েলপন্থী অবস্থানকে কাজে লাগাতে নেতানিয়াহু কার্যত ট্রাম্পকে সামনে ঠেলে দিয়েছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ, পশ্চিমতীরে সহিংসতা এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে নেতানিয়াহু এমন এক বার্তা ছড়াতে চাচ্ছেন, যাতে আমেরিকার ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব আবারও ইসরায়েলঘেঁষা হয়। গার্ডিয়ান জানিয়েছে, “নেতানিয়াহু জানেন ট্রাম্প পুনর্নির্বাচনে আগ্রহী এবং সেই আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে তিনি তাঁর কৌশলগত লক্ষ্য পূরণে সক্ষম হতে পারেন।”
বিশ্লেষণে আরও বলা হয়, এই সম্পর্ক কেবল ব্যক্তিগত বন্ধুত্বে সীমাবদ্ধ নয়—এটি একধরনের রাজনৈতিক বোঝাপড়া, যেখানে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রয়োজন এবং নেতানিয়াহুর নিরাপত্তা আশঙ্কা এক বিন্দুতে এসে মিলেছে।
তবে এই ঘনিষ্ঠতার কড়া সমালোচনাও উঠেছে। কিছু মার্কিন বিশেষজ্ঞ বলছেন, “এই সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রকে আরও গভীরভাবে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে জড়িয়ে ফেলতে পারে, যা আমেরিকার দীর্ঘমেয়াদি কূটনৈতিক অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”
গার্ডিয়ানের এই বিশ্লেষণ এমন এক সময়ে প্রকাশিত হলো, যখন ওয়াশিংটন এবং তেলআবিবের মধ্যে নতুন করে চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে গুঞ্জন চলছে এবং ইরান ইস্যুতে পশ্চিমা জোটে ভাঙনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
Comments are closed