বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)সহ চারটি বামপন্থী দলের আপত্তির পর ‘জুলাই জাতীয় সনদ–২০২৫’–এ গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর ফলে সংবিধান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বাদ পড়ছে না বলে নিশ্চিত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
প্রায় আট মাস ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা শেষে ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সনদের অনুলিপি পাঠায়। সেখানে বলা হয়েছিল, সংবিধানের ১৫০(২) অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করা হবে এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তফসিল সংবিধান থেকে বাদ দেওয়া হবে।
তবে এই প্রস্তাবে ৯টি রাজনৈতিক দল দ্বিমত পোষণ করে। বিশেষ করে সিপিবি, বাসদ, বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ গতকাল (বৃহস্পতিবার) এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, তারা এই সনদে স্বাক্ষর করবে না।
তাদের যুক্তি ছিল, সংবিধান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা ও মুক্তিযুদ্ধের দলিল বাদ দেওয়ার প্রস্তাব বাংলাদেশের অস্তিত্বের ভিত্তিকে দুর্বল করবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাম দলগুলোর নেতারা বলেন, “সংবিধানের ১৫০(২) অনুচ্ছেদে থাকা ৬ষ্ঠ তফসিলের ‘ডিক্লারেশন অব ইনডিপেনডেন্স’ এবং ৭ম তফসিলের ‘প্রক্লেমেশন অব ইনডিপেনডেন্স’ বাদ দেওয়া মানে স্বাধীনতার ঘোষণাকে অস্বীকার করা।”
তাদের আপত্তির পর জুলাই সনদের সংশ্লিষ্ট অংশে পরিবর্তন আনা হয়। চূড়ান্ত সনদে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১৫০(২) অনুচ্ছেদ সংশোধন করা হবে, তবে এর সঙ্গে থাকা পঞ্চম ও ষষ্ঠ তফসিলই বাদ দেওয়া হবে, সপ্তম তফসিল-অর্থাৎ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র-সংবিধানে বহাল থাকবে।
উল্লেখ্য, সংবিধানের পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তফসিল যুক্ত করা হয় ২০১১ সালের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে।
পঞ্চম তফসিল: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ
ষষ্ঠ তফসিল: ২৫ মার্চের পর বঙ্গবন্ধুর দেওয়া স্বাধীনতার ঘোষণা
সপ্তম তফসিল: ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র
অর্থাৎ নতুন ‘জুলাই সনদ’ অনুসারে, সংবিধান সংস্কারের পর ৭ মার্চের ভাষণ ও বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা তফসিল থেকে বাদ পড়বে, তবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সংবিধানে বহাল থাকবে।




Comments are closed