জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা—এমন মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই আজম।
বুধবার সকালে যমুনা টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “মুজিবনগর সরকারের সদস্যরা সরাসরি মুক্তিযোদ্ধা। তবে সেই সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে বিবেচিত হবেন।”
এই বক্তব্য এমন সময় এলো যখন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) নতুন এক অধ্যাদেশে বঙ্গবন্ধু, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদসহ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী প্রায় ৪০০ নেতাকে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ নয়, ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগ থেকে জারি হওয়া এই অধ্যাদেশে বলা হয়, মুজিবনগর সরকারের সদস্যসহ আরও চার শ্রেণির বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিচিতি ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে নির্ধারিত হবে। এর ফলে তাঁদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি কার্যত বাতিল হয়ে গেছে।
এই সিদ্ধান্ত ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদেরই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ার অর্থ কী?
নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে গণ্য হবেন—
১. বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখা পেশাজীবীরা
২. মুজিবনগর সরকারের অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দূতরা
৩. স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী, সাংবাদিকরা
৪. স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যরা
উল্লেখ্য, বাতিল হওয়া জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন ২০২২-এ এই শ্রেণিগুলোকেই সরাসরি ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।
নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ঐতিহাসিক নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিদের পরিচয় ঘিরে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, যা রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিসরে বিতর্ককে আরও তীব্র করে তুলেছে।
Comments are closed