ঢাকা: শনিবার (২৯ জুন) বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখন দলটির নেতাদের কাছে আতঙ্কের নাম বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।
সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিতে এখন আতঙ্কের নাম তারেক রহমান। তারেক রহমান আতঙ্কের নাম। মধ্যরাতে টেমস নদীর পাড় থেকে ফরমান আসে, ওই উইকেট বাদ, নতুন ইউকেট আসে। একজন গেল, আরেকজন এলো। মধ্যরাতের ফরমান। তারেক রহমানের এই ফরমানে ফখরুল সাহেব আপনি কোথায় যান, গয়েশ্বর বাবু আপনি কোথায় যান, কেউ জানে না। এজন্যই এখন তারেক বন্দনা বেড়ে গেছে। বিএনপিকে লন্ডনে বসে কর্মসূচি দেয়। কর্মসূচির নাম মেইড ইন লন্ডন। নতুন নেতৃত্ব পাঠায় ফরমান আকারে। এ নতুন নেতৃত্বের নাম মেইড ইন লন্ডন। লন্ডনে বসে নেতা বানায়, লন্ডনে বসে কর্মসূচি দেয়। এ কর্মসূচি কেউ মানে? বাংলাদেশের জনগণ এই মেইড ইন লন্ডন কর্মসূচি মানে না, মানবে না।
তিনি বলেন, আমি বলেছিলাম, আমরা বছরব্যাপী আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করবো। সেখানে আজ মিডিয়ায় খবর হয়, আমরা নাকি পাল্টাপাল্টি করছি। কিসের পাল্টাপাল্টি। গতকাল আমরা সাইকেল র্যালি করেছি। গতকাল কি বিএনপির কিছু ছিল? তাহলে কেন এ অপবাদ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। আমরা তো পাল্টাপাল্টি করছি না। আমরা সারাবছর আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করবো। এমনকি আগস্ট মাসের পরে জেলা পর্যায়ে আমাদের সমাবেশ হবে। সেই সমাবেশে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আজকে বিএনপি বড় বড় কথা বলে। বিএনপি নেতাদের আন্দোলনে তত জোর নেই। মুখের বিষে যত জোর। তাদের মুখের বিষ ভয়ংকর উগ্র। কিন্তু তাদের আন্দোলন জুঁই ফুলের গান। এতে আওয়ামী লীগ সরকার একটুও বিচলিত নয়।
বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা কিন্তু হবে। ছেড়ে দেওয়া হবে না। দাসত্ব, ইজারা কাকে বলে, ভুলে গেছেন? ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর দিন সকালে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে বিএনপি নেতারা ফুলের মালা আর মিষ্টি নিয়ে হাজির। দালালি করতে চেয়েছিলেন, পারেননি, পাত্তা পাননি। যত দোষ নন্দ ঘোষ, আওয়ামী লীগের। আমাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব। ক্ষমতার জন্য যে কারো দাসত্ব মেনে নিতে আপনাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা বন্ধু আছি, বন্ধু থাকবো। বিদেশে আমাদের সবাই বন্ধু, আমাদের প্রভু কেউ নেই। আপনাদের প্রভু আছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কথায় কথায় নিষেধাজ্ঞা, ভিসানীতি। জজ মিয়া নাটকের পর মিয়া আরেফিন নাটক। মিয়া আরেফিন নাকি বাইডেনের বন্ধু। হঠাৎ করে ২৮ অক্টোবর মিয়া আরেফিনকে বাইডেনের বন্ধু সাজিয়ে সাংবাদিকদের সামনে নিয়ে আসলেন। গরগর করে ইংরেজি বলছে। পরে দেখা গেল বাইডেনের বন্ধু ভুয়া। বাইডেনের বন্ধু পালিয়ে যাবে, পুলিশ গিয়ে ধরলো। তারপর যখন গায়ে একটা দুইটা ডান্ডা লাগলো, পুলিশের ডান্ডা খেয়ে আরেফিন তখন বরিশালের ভাষা বলা শুরু করলো। জেলে এত নেতা, কই ফখরুল সাহেব আপনি মিয়া আরেফিনের মুক্তি তো কোনোদিন চাননি। সবার মুক্তি চান, আরেফিনের মুক্তি চান না কেন সাংবাদিকরা ফখরুলকে এই প্রশ্ন করবেন। আপনাদের জন্যই তো আজকে তার এই অবস্থা। জেল-জুলুম তার ওপরে চলছে।
জনগণের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, বাড়াবাড়ি কেউ করবেন না। ক্ষমতার দাপট কেউ দেখাবেন না। কাউকে ক্ষমা করা হবে না। শেখ হাসিনার শূন্য সহিষ্ণুতা দুর্নীতির বিরুদ্ধে। মুখে অত আওয়াজ নেই। কিন্তু কাজের বেলায় দুর্নীতিবাজদের কারো ছাড় নেই, কারো ক্ষমা নেই। শেখের বেটি দেখিয়ে দেবেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি কতটা কঠোর হতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো কথা বলার থাকে না। কারণ বিএনপি মানেই দুর্নীতিবাজ দল। তারেক রহমান হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। বিএনপি নেতারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন, লজ্জা করে না। আপনাদের এক নম্বর নেতাই তো বড় দুর্নীতিবাজ। ওই দুর্নীতিবাজকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। বিচার করতে হবে। সব তদন্ত হবে, কে কত টাকা বানিয়েছেন।
বিএনপি এখন সরকার হঠানোর আন্দোলন করছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, পরিষ্কার বলে দিতে চাই, করেন আন্দোলন। তবে আন্দোলনে সহিংসতার উপাদান যুক্ত হলে খবর আছে। আবারো খেলা হবে। দুর্নীতি, অর্থপাচার, লুটপাট, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে খেলা হবে। জোরদার খেলা হবে। সবাই প্রস্তুত হয়ে যান।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় আলোচনা
Comments are closed