VTVUS

NEWS24/7

ওয়াশিংটন, এপ্রিল ২০২৫ — মাইক্রোসফটের এআই প্রযুক্তি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর গাজা হামলায় ব্যবহৃত হওয়ার খবর ফাঁসের পর প্রতিষ্ঠানটির ভেতরেই শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ। প্রতিষ্ঠানটিরই একজন প্রকৌশলী, ইবতিহাল আবুসাদ, অভিযোগ করেন—তিনি যে কোড লিখেছেন, তা গাজায় ব্যবহার করা হচ্ছে হামলার উদ্দেশ্যে।

আবুসাদ কাজ করতেন মাইক্রোসফটের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিভাগে। গোপনীয় প্রকল্প ‘প্রজেক্ট আজোর’-এর অধীনে মাইক্রোসফট ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে ক্লাউড কম্পিউটিং ও এআই প্রযুক্তি দিচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। এসব প্রযুক্তি বিশেষভাবে ইসরাইলের কুখ্যাত ইউনিট ৮২০০, ইউনিট ৮১ ও ওফেক দ্বারা ব্যবহৃত হচ্ছে, যা হত্যা তালিকা তৈরির জন্য কুখ্যাত।

এই খবরে হতবাক হয়ে আবুসাদ ‘No Azure for Apartheid’ আন্দোলনে যুক্ত হন। এরপর মাইক্রোসফটের ৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে তিনি প্রকাশ্যে এআই বিভাগের প্রধান মুস্তাফা সুলেইমানকে ধিক্কার জানান। “Mustafa, shame on you!”—বলে ক্ষোভ ঝাড়েন তিনি।

একই অনুষ্ঠানে আরেক কর্মী ভানিয়া আগরওয়াল সরাসরি বিল গেটস, স্টিভ বালমার ও সিইও সত্য নাদেলাকে বলেন, “গাজার ৫০ হাজার মানুষকে মাইক্রোসফট-এর প্রযুক্তি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আপনারা উৎসব করছেন?”

উল্লেখ্য, এই প্রতিবাদের পরই দুই কর্মীকে চাকরিচ্যুত করে মাইক্রোসফট। অভিযোগ করা হয়—তারা ‘ইচ্ছাকৃত অবাধ্যতা’ ও ‘দায়িত্বে অবহেলা’ করেছেন। যদিও প্রতিষ্ঠানটি তার নীতিমালায় বলেছিল, “Speak your mind at Microsoft”—প্রকৃত বাস্তবতায় ভিন্ন চিত্র ধরা পড়েছে।

এই ঘটনার পর মাইক্রোসফট সদরদপ্তরের সামনে বিশাল প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়। আন্দোলনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা হোসাম নাসর বলেন, “কর্মীরা জানে তারা চাকরি হারাতে পারে, তবুও প্রতিবাদ করছে—এটাই বলে দেয় প্রতিষ্ঠানটি কতটা ভুল পথে এগোচ্ছে।”

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আবারও আলোচনায় এসেছে গুগল ও অ্যামাজনের ‘প্রোজেক্ট নিম্বাস’। এই প্রকল্পের আওতায় ১.২ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে ইসরাইলকে নজরদারি প্রযুক্তি দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

এদিকে বিডিএস আন্দোলন মাইক্রোসফটের জনপ্রিয় গেমিং প্রোডাক্ট Xbox, Minecraft, Call of Duty এবং Candy Crush-কে বর্জন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর এ ধরনের ভূমিকায় এখন প্রশ্ন উঠেছে—এআই কি কেবল ব্যবসার জন্য, নাকি মানবাধিকারের প্রতিও তাদের দায়বদ্ধতা থাকা উচিত? এ প্রসঙ্গে বিশ্লেষকরা বলছেন, “প্রযুক্তি এখন শুধু ডিভাইস নয়, এটি জীবন ও মৃত্যুর মাঝে ব্যবধান তৈরি করছে।”

Categories:

Tagged:

Comments are closed