VTVUS

NEWS24/7

৩৬৯ ফিলিস্তিনি ছাড়া পেল  হামাসের তিন ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে

গাজার যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা শঙ্কার মধ্যেই তিনজন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে তাদেরকে গাজার খান ইউনিস থেকে রেডক্রসের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ জানিয়েছে, শনিবার মুক্তি পাওয়া তিনজন বন্দি ইতোমধ্যে ইসরায়েলে পৌঁছেছে।

ওই তিনজন জিম্মি মুক্তি পাওয়ার পর তাদের বহনকারী রেডক্রসের গাড়ি গাজার খান ইউনিস ছেড়ে যায়।

এর আগে গত সোমবার হামাস জানায়, তারা এই সপ্তাহান্তে আর কোনো বন্দি মুক্তি দেবে না এবং তারা ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগে দোষারোপ করে। ইসরায়েল জানিয়েছে, যদি শনিবার দুপুরের মধ্যে বন্দিদের মুক্তি না দেওয়া হয়, তবে তারা গাজায় হামলা আবার শুরু করবে। গাজার অভ্যন্তরে ও আশপাশে ইসরায়েলি বাহিনীর উপস্থিতি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের “স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন অবস্থান”র কারণে বন্দিমুক্তি অব্যাহত রয়েছে রয়েছে বলে জানায়  ইসরায়েল 

এদিকে মুক্তি পাওয়া ওই তিনজনের  প্রাথমিকভাবে ইসরায়েলের একটি সামরিক ঘাঁটিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তারা পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবেন।

এর আগে জিম্মিদের মুক্তি দেয়ার সময় তাদেরকে ঘিরে রেখেছিলেন বন্দুকধারীরা।

গাজা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তারা হামাসের হাতে বন্দি ছিলেন। মুক্তি পাওয়া বন্দির একজন হলেন ইসরায়েলি-রুশ নাগরিক , একজন ইসরায়েলি-আর্জেন্টাইন এবং একজন ইসরায়েলি-আমেরিকান

মুক্তি পাওয়া ৩৬৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দির মধ্যে কিছু তাদের কিছু অংশ পশ্চিম তীরে পৌঁছেছে। বাকিরা পরে গাজায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

এদিকে জিম্মি মুক্তিকে কেন্দ্র করে রামাল্লায় শনিবার বন্দিদের স্বজনদের  বিশাল জন সমাগম তৈরি হয়।

কেননা আগে থেকে জানানো হয়েছিল সেখানে মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনিদের ছোট একটি অংশকে আনা হবে।

যে কারণে বন্দিদের আত্মীয়-স্বজনসহ অনেকেই সেখানে উপস্থিত হয়। সেখানে থাকা অনেককে স্বস্তি প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

ফিলিস্তিনিরা স্বস্তি প্রকাশ করে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকার কারণেই শনিবার অনেকের মুক্তি সম্ভব হয়েছে।

তারা বলেন “আমরা খুবই উদ্বিগ্ন ছিলাম, যুদ্ধবিরতির চুক্তি ভেস্তে যেতে পারে এই আশঙ্কায় আমরা ঘুমাতেও পারিনি। আমাদের প্রার্থনা ছিল যুদ্ধবিরতি বজায় থাকুক, গাজা পুনর্নির্মাণ হোক এবং সব বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হোক,” সেখান থেকে বলছিলেন এক ব্যক্তি, যিনি ২০০০ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে আটক হওয়া একজন স্বজনের মুক্তির অপেক্ষায় ছিলেন।

শনিবার ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ যাদের মুক্তি দিয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন ইসরায়েলিদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার দায়ে দণ্ডিত ব্যক্তিরা যাদের কোনো বিচার কিংবা অভিযোগ ছাড়াই আটক করা হয়েছিল।

ফিলিস্তিনি বন্দি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল যেসব ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিচ্ছে তাদের মধ্যে ২৯ জন পশ্চিম তীরের এবং সাতজন জেরুজালেম ও আশপাশের এলাকার।

২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবরের পর গাজা থেকে আটক হওয়া ৩৩৩ জনকে মুক্তি দেওয়া হবে বলেও সংস্থাটি জানিয়েছে।

এদিকে নেতানিয়াহু দপ্তরের বিবৃতিতেইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু  তিনজন ইসরায়েলি বন্দি মুক্তির বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন।

একই সঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এখনো গাজায় আটক থাকা বন্দিদের মুক্ত করতে ইসরায়েল সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে’।

তবে ইসরায়েল বলছে, গাজা থেকে আটক যে সব বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে তাদের অবস্থা ছিল ‘অকল্পনীয়’।

শনিবার হামাস যে কয়েকজনকে মুক্তি দেয় তাদের মধ্যে একজন আর্জেন্টাইন-ইসরায়েলি বন্দি

মুক্তির পর তিনি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর কাছে পৌঁছান। ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে মি. হর্নকে “অবর্ণনীয় পরিস্থিতিতে” আটক রাখা হয়েছিল। তাকে প্রায় ৫০০দিন ‘অকল্পনীয়’ অবস্থায় আটকে রাখা হয়।

এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে আজকের বন্দিমুক্তি প্রমাণ করে যে শুধুমাত্র আলোচনা এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত মেনে চললেই কেবল গাজায় আটককৃত বন্দিদের মুক্তি সম্ভব।

Tagged:

Comments are closed