ইউক্রেন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুজনই দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি তাঁদের প্রচণ্ড অসন্তোষের দিক দিয়ে একবিন্দুতে এসেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া উভয় দেশের নেতারাই চাইছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের পদ থেকে জেলেনস্কি সরে যান।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প দাবি করেন, ‘আমরা এমন একটি অবস্থায় আছি, যেখানে ইউক্রেনে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি, যেখানে সামরিক শাসন চলছে এবং বলতে কষ্ট লাগছে যে তাঁর (জেলেনস্কি) জনপ্রিয়তা ৪ শতাংশে নেমে এসেছে।’
এর পাঁচ দিন পর পুতিন ট্রাম্পের বক্তব্যকে সমর্থন জানান। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আসলে তাঁর (জেলেনস্কির) কত শতাংশ জনসমর্থন আছে, সেটা বড় কথা নয়, তা ৪ শতাংশ বা যা-ই হোক না কেন। গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, তাঁর জনপ্রিয়তা তাঁর সম্ভাব্য রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর তুলনায় ঠিক অর্ধেক।’ রুশ প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ইউক্রেনের সাবেক শীর্ষ জেনারেল ভ্যালেরি জালুঝনির দিকে ইঙ্গিত করে এ কথা বলেন। এই জেনারেলকে গত বছর চাকরিচ্যুত করেছিলেন জেলেনস্কি।
ট্রাম্প ও পুতিন দুজনই জেলেনস্কির জনপ্রিয়তার বিষয়ে ভুল ছিলেন।
কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোশিওলজির জরিপ অনুযায়ী, ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির কূটনৈতিক টানাপোড়েন ইউক্রেনের ভেতরে তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দেয়। ডিসেম্বরে তার জনপ্রিয়তা ছিল ৫২ শতাংশ, যা ফেব্রুয়ারিতে বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭ শতাংশে।
অবশ্য জরিপ অনুযায়ী, ৩৭ শতাংশ ইউক্রেনীয় জেলেনস্কিকে বিশ্বাস করেন না।
সমালোচকেরা জেলেনস্কির বিরুদ্ধে নাগরিকদের বাক্স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ করেন। এ ছাড়া তিনি নিজের রাজনৈতিক দল ‘সার্ভেন্ট অব দ্য পিপল’–এর ভেতর দুর্নীতি বন্ধে ব্যর্থ হয়েছেন, বিশেষ করে সামরিক বাহিনীর ভেতরে দুর্নীতি বন্ধে ব্যর্থ হয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে জালুঝনিকে বরখাস্ত করার জন্যও তাঁর সমালোচনা হয়।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী জালুঝনির ব্যাপারে ঠিকই বলেছিলেন পুতিন। কারণ, জালুঝনিই ইউক্রেনের একমাত্র ব্যক্তি, যিনি জেলেনস্কিকে হারাতে পারেন।
শক্তপোক্ত, স্বল্পভাষী এই জেনারেলের ৬২ শতাংশ জনসমর্থন রয়েছে। তবে তিনি একাধিকবার বলেছেন, যুদ্ধ চলাকালে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেবেন না।
জালুঝনি গত সপ্তাহে ইউক্রেনের বার্তা সংস্থা আরবিসি–ইউক্রেনকে বলেছেন, ‘যখন যুদ্ধ চলছে, তখন আমাদের সবার উচিত দেশকে রক্ষার জন্য কাজ করা, নির্বাচনের ব্যাপারে চিন্তা করা নয়।’
Comments are closed