যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আসন্ন বাণিজ্য সংলাপকে সামনে রেখে শতাধিক মার্কিন পণ্যের আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
সিপিডির সমালোচনা
মঙ্গলবার গুলশানে সিপিডি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন,
“বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, এই সুবিধা সবাইকে দিতে হবে। না দিলে বৈষম্য হবে, আর দিলে বড় অঙ্কের রাজস্ব হারাবে সরকার।”
শুল্ক ছাড়ের পরিমাণ
১১০টি মার্কিন পণ্যে শতভাগ শুল্ক প্রত্যাহার
৬৫টি পণ্যে শুল্ক হ্রাস
৯টি পণ্যে সম্পূরক শুল্ক বাতিল
৪৪২টি পণ্যে সম্পূরক শুল্ক হ্রাস
যেসব পণ্য শুল্কছাড় পাচ্ছে:
বিভিন্ন ধরনের সূতা, পারমাণবিক চুল্লির যন্ত্রাংশ, বয়লার, হাইড্রলিক টার্বাইন, ইনকিউবেটর, ব্রুডার, এমআরআই যন্ত্রসহ খামার ও শিল্প কারখানার যন্ত্রপাতি।
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক চাপ
সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে ৩৭% অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে।
ফলে মোট শুল্কহার দাঁড়িয়েছে ৫২%, যা আগে ছিল গড়ে ১৫%।
এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বানে ৯০ দিনের জন্য শুল্ক স্থগিত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র (চীন ব্যতীত)।
প্রতিউত্তরে বাংলাদেশের কৌশল
যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া আলোচনার শর্ত মেনে বাংলাদেশ বন্ড সুবিধা, রপ্তানি শুল্ক হ্রাস ও আমদানি শুল্ক কমানোর মতো পদক্ষেপ নিয়েছে। এতে অভ্যন্তরীণ পণ্যের দাম কমবে এবং জনসাধারণের ওপর করের চাপ কিছুটা হ্রাস পাবে।
রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য সরকার ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ঠিক করেছে, যা জিডিপির ৯%। এর মধ্যে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা এনবিআরের মাধ্যমে সংগ্রহের লক্ষ্য রয়েছে।
এই শুল্ক ছাড় কূটনৈতিক সুবিধা বয়ে আনবে কি না, সেটা নির্ভর করছে আলোচনার ফলাফলের ওপর। তবে সিপিডি বলছে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সরকারকে আরও গভীর বিশ্লেষণ ও প্রস্তুতি নেওয়া দরকার ছিল।
Comments are closed